আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীর তিনতলা ভবন দখলের অভিযোগ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান নুর হোসেন ওরফে "মাটি মাসুদের" বিরুদ্ধে প্রবাসীর তিনতলা ভবন দখলের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে নোয়াখালী টিভি সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভবনের মালিক প্রবাসীর স্ত্রী কাজল রেখা।

অভিযোগের বিবরণ

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কাজল রেখা জানান, তার স্বামী প্রবাসে থাকা অবস্থায় পাঠানো অর্থ এবং সংসারের সঞ্চিত টাকা দিয়ে ১৯৯৪ সালে চৌমুহনী পৌরসভার কুরি পাড়ায় ১৩ শতক জায়গার ওপর ৪ শতক জমিতে একটি তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। ২০০৭ সালে সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ঢাকায় চলে গেলে তিনি ভবনের দেখাশোনার দায়িত্ব কেয়ারটেকার নুর হোসেনকে দেন।

কাজল রেখার অভিযোগ, শুরুতে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও ২০০৯ সাল থেকে নুর হোসেন ভাড়া আদায়ের টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেন। পরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন অবস্থান ব্যবহার করে তিনি ভবনটি দখল করে নেন। নিচতলায় তিনি নিজে বসবাস শুরু করেন এবং দোতলায় আরেক আওয়ামী লীগ নেতা সাহাবুদ্দিন অবস্থান নেন।

জোরপূর্বক বিক্রির অভিযোগ

কাজল রেখা জানান, ৬০-৭০ লাখ টাকার সম্পত্তি মাত্র ৩৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করে তাকে মাত্র ৬ লাখ টাকা দিয়ে বাকিটা না দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির মালিকানা পরিবর্তন করে নেন। তাকে বাড়ি ছাড়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি দেওয়া হয় এবং পরিবারসহ প্রাণনাশের ভয় দেখানো হয়।

বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হওয়ার ঘটনা

ভয়ে ও চাপে পড়ে তিনি তার পরিবারসহ নোয়াখালী ছেড়ে চলে যান। নিজের ব্যবহারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, দলিলপত্রসহ কিছুই সঙ্গে নিতে পারেননি। দীর্ঘদিন পর, ৫ আগস্ট স্থানীয় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে পরিস্থিতি বদলে গেলে তিনি ফিরে এসে নিচতলা এবং তৃতীয়তলা উদ্ধার করেন। তবে দোতলা এখনো তার দখলে নেই।

ন্যায়বিচারের দাবি

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কাজল রেখা প্রশাসন ও দেশবাসীর কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযুক্তের প্রতিক্রিয়া

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেগমগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও ভাইস-চেয়ারম্যান নুর হোসেন ওরফে মাটি মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে মাটি মাসুদ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছেন।

Post a Comment

0 Comments