যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতালে সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

নোয়াখালীতে যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত আবদুর রহমান (৩৩) সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মাওলানা সাইদুল হকের ছেলে। তিনি সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার বিবরণ

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমান (২৫) নামে দুই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের তাৎক্ষণিক ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে আবদুর রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের শরীরে নীলা-ফুলা জখম থাকলেও গুরুতর কাটাছেঁড়া ছিল না। হাবিবুর রহমান এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পরিবারের অভিযোগ

নিহতের চাচা মো. হানিফ অভিযোগ করেন, সোমবার ভোরে যৌথবাহিনী হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমানকে আটক করে। আটকের সময় পরিবারের সামনেই তাদের মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় একটি দোকানের কাছে নিয়ে গুলি ও কিরিচ উদ্ধারের দাবি করে যৌথবাহিনী। সকাল আটটার দিকে তাদের সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।

চাচা হানিফ আরও জানান, থানায় আহত অবস্থায় তাদের দেখতে গেলে পুলিশ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অস্বীকৃতি জানায়। বিকেলে আদালতে পাঠানোর সময় আদালত তাদের চিকিৎসার নির্দেশ দিলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই আবদুর রহমান মারা যান।

পুলিশের বক্তব্য

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, "গ্রেপ্তারের সময় কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না বলেই স্থানীয় বজরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় তিনটি মামলা ছিল। তাদের কাছ থেকে দুটি রাইফেলের গুলি ও তিনটি রাম দা উদ্ধার করা হয়েছে।"

মৃত্যুর পরবর্তী পদক্ষেপ

ওসি আরও জানান, আবদুর রহমানের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মঙ্গলবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন।

Post a Comment

0 Comments