Suborno char / সুবর্ণচর
জন্মান্ধ শিক্ষক ইয়াহইয়া ছড়াচ্ছেন কোরআনের আলো
সিলেটের জন্তাপুর গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে হাফেজ মো. ইয়াহইয়া (২২) জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। পেশায় একজন মাদরাসা শিক্ষক, ইয়াহইয়ার জন্মান্ধতা কখনোই তার জন্য প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। বরং জীবনকে জয়ের প্রত্যয়ে তিনি শুরু থেকেই লড়াই করে চলেছেন। শারীরিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গত পাঁচ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন, যা তাকে সমাজে উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
২০০২ সালে জন্ম নেওয়া ইয়াহইয়া শৈশব থেকেই পারিপার্শ্বিক সমাজের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ সহ্য করে বড় হয়েছেন। সাত ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম ইয়াহইয়া মাত্র ১২ বছর বয়সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন এবং কয়েক বছর পর থেকেই শিক্ষকতা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচরের তা'মীরুল উম্মাহ হিফজুল কোরআন মাদরাসায় হিফজ বিভাগে শিক্ষকতা করছেন, যেখানে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে কোরআন শেখান।
শৈশব থেকেই ইয়াহইয়ার সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর ও অসাধারণ কুরআন তেলাওয়াত যে কাউকে মুগ্ধ করে। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক, যারা তার কাছে অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে পাঠ গ্রহণ করে। বাগেরহাট আমতলী মাদরাসা ও পাবনার চাওতুল কোরআন মাদরাসায়ও তিনি পাঁচ বছর শিক্ষকতা করেছেন।
যদিও ইয়াহইয়া দৃষ্টিহীন, তবুও তিনি সম্পূর্ণ স্বনির্ভর। নিজেই সমস্ত কাজ করেন এবং কারো ওপর নির্ভর না করে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি নিজের জীবনকে কোরআনের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে উৎসর্গ করেছেন।
সুবর্ণচরের তা'মীরুল উম্মাহ হিফজুল কোরআন মাদরাসার মুহতামিম এইচ, এম, নাছরুল্লাহ বলেন, “দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা ইয়াহইয়ার স্বপ্ন পূরণের পথে কখনো বাধা হতে পারেনি। তিনি একজন প্রেরণার নাম, যিনি তার মনের শক্তি ও উদ্যম দিয়ে প্রমাণ করেছেন, দৃষ্টি না থাকলেও তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কোরআনের সঙ্গে থাকতে চান এবং তা ছড়িয়ে দিতে চান।”
0 Comments