মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম


নোয়াখালীর কবিরহাটে কলেজছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় তার বাবাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আহত ব্যক্তি, মিজানুর রহমান মিজান ওরফে মিলন (৫৫), মাথায় অস্ত্রোপচারের পর এখনো চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামের রায় বাড়িতে। মিলন মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে এবং একজন ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত সঞ্চয় রায় (২৫) একই বাড়ির দেবরাজ রায়ের ছেলে।

আহত মিলনের ছোট ভাই ফরিদের অভিযোগ, তার ভাই কবিরহাট বাজারে একটি ইলেকট্রিক দোকান পরিচালনা করেন এবং ইলেকট্রিক কাজ করেও জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মেয়ে মাইনুর আক্তার মিম (২৪), নোয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। প্রায় ১৫-২০ দিন আগে, বিকেলে পুরান বাড়ি থেকে নতুন বাড়ি যাওয়ার পথে সঞ্চয় তার পথরোধ করে এবং শারীরিকভাবে হয়রানি করে। প্রথমে মিম ভয়ে কিছু না বললেও এরপর থেকে সঞ্চয় নিয়মিত তাকে উত্যক্ত করতে থাকে।

মিমকে পাত্তা না পেয়ে সঞ্চয় তার চাচাতো বোন, স্থানীয় নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল নাঈম নুনকে (১৪) উত্যক্ত করতে শুরু করে। ৬ মার্চ রাতে, বসতঘরের নুনের শয়নকক্ষের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে সে অশ্লীল কথা বলতে থাকে এবং জানালায় ধাক্কাধাক্কি করে। নুনের দাদী হালিমা খাতুন (৭৫) টের পেয়ে বাইরে এসে সঞ্চয়কে হাতেনাতে ধরেন, কিন্তু সে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনার জেরে, ৭ মার্চ রাতে মিলন সঞ্চয়ের বাবার কাছে তার অপকর্মের অভিযোগ জানাতে গেলে সঞ্চয় ক্ষিপ্ত হয়ে চাইনিজ কুড়াল নিয়ে বের হয়ে আসে এবং এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে, মিলনের মাথায় কুড়ালের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। মিলনকে বাঁচাতে গেলে তার ছোট ভাই ফরিদকেও মারধর করা হয়। শৌরচিৎকার শুনে এগিয়ে এলে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবও হামলার শিকার হন।

অভিযুক্ত সঞ্চয় ও তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের মতে, ঘটনার পর থেকে পুরো পরিবার পলাতক রয়েছে।

এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর আহমদ বলেন, "আমরা এমন একটি ঘটনার খবর পেয়েছি, তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

Post a Comment

0 Comments